ইউরোপিয়ান সাদার্ন অবজারভেটরি (ESO) হ্যালোইন ২০২৫ উপলক্ষে প্রকাশ করেছে এক দারুণ দৃশ্য—এক বিশাল গ্যাস ও ধুলোর মেঘ, যার আকার উড়ন্ত বাদুড়ের মতো। এই “কসমিক ব্যাট” আসলে দুটি বড় নীহারিকার সমন্বয়ে গঠিত—RCW 94 ও RCW 95—যেখানে নতুন নক্ষত্র জন্ম নিচ্ছে। এটি মিল্কিওয়ের নরমা বাহুতে, পৃথিবী থেকে প্রায় ১০,০০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।

এই অঞ্চলটি সার্কিনাস ও নরমা নক্ষত্রমণ্ডলের মাঝে অবস্থান করছে এবং আকাশে এটি পূর্ণিমার চাঁদের প্রায় চারগুণ বড় এলাকা জুড়ে রয়েছে। এটি একটি সক্রিয় H II অঞ্চল, যেখানে আয়নিত হাইড্রোজেন গ্যাস উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নতুন নক্ষত্রের তীব্র অতিবেগুনি বিকিরণের ফলে। এই বিকিরণ হাইড্রোজেন পরমাণুগুলিকে উত্তেজিত করে, যার ফলে তারা লাল আলো নিঃসরণ করে—যা “বাদুড়ের ডানা”র মতো আভা সৃষ্টি করে।

ছবির অন্ধকার দাগ ও তন্তুগুলো আসলে ঘন ধুলোর মেঘ, যা দৃশ্যমান আলোকে আটকায় ও ছড়িয়ে দেয়। ডান দিকের “ডানা” হলো RCW 94, আর ঘন মধ্যবর্তী অংশটি RCW 95। বাকি অংশগুলোর এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক নাম নেই।

এই অসাধারণ দৃশ্যটি তৈরি হয়েছে VLT সার্ভে টেলিস্কোপ (VST)-এর দৃশ্যমান আলোর তথ্য এবং VISTA টেলিস্কোপের অবলোহিত আলোর তথ্য একত্র করে। অবলোহিত আলো ধুলোর ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে পারে, ফলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নবজাত নক্ষত্র ও লুকানো নক্ষত্রগুচ্ছ দেখতে পারেন, যা সাধারণ আলোতে অদৃশ্য থাকে। এই দুটি দৃষ্টিভঙ্গির মিশ্রণে বিজ্ঞানীরা নীহারিকার জটিল গঠন ও নতুন নক্ষত্র তৈরির প্রক্রিয়া আরও ভালোভাবে বুঝতে পারেন।


কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ
• দৃশ্যমান (VST) ও অবলোহিত (VISTA) তথ্য মিলিয়ে ধুলোর আড়ালে লুকানো নবীন নক্ষত্র ও নক্ষত্রগুচ্ছ প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে।
• এই H II অঞ্চলগুলো দেখায় কীভাবে নতুন, উষ্ণ নক্ষত্রের বিকিরণ ও বাতাস আশেপাশের গ্যাস ও ধুলোকে আকার দেয়।
• হ্যালোইন ২০২৫-এর সময় প্রকাশিত এই ছবিটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে নক্ষত্র জন্ম প্রক্রিয়া এক চিরন্তন ঘটনা, যার আলো পৃথিবীতে পৌঁছাতে শুরু করেছিল মানুষের আগেই।